Friday, February 1, 2008

স্বপ্নবৃক্ষতলে

বল হে সন্ধ্যা ফাগুন দিনের, বল হে আধো তমসার শস্যহীন মাঠ, বল হে প্রাচীনা নদী, বল হে জরাজীর্ণ স্নানাগার... ঝরাপাতা... বালুচর... আমার সেসব পাপড়ি ঝরিয়ে দিল কেন পুবাল বাতাস

শিমুলের শাখে শাখে সধবারা মাথার সিঁদুর জমা রেখে পরাহ্ণবেলায় নাইতে নেমেছিল, একথা ভুবন বলে গেছে বাতাসের মতো কানে কানে, ভুবন রবি কাকুর সেজো ছেলে, কারো কোনো অকল্যাণ চায় নি বলে গেল বছর পাখিদের সিনেটে সে সুনাম কুড়িয়েছিল, এখন এই সন্ধ্যায় তারা মানে সধবারা, ভালোয়-ভালোয় তাদের ভেজাসুতি বদলানো হয়ে গেলে সার সার ঘরে ফিরে যাচ্ছে পুনঃসিঁদুরচর্চিত হয়ে, আর সব পাতাহীন শিমুল গাছ, বিষণ্নতা সমভিব্যাহারে ঘুমুতে যাচ্ছেন রাতের শয্যায়

পশ্চিমে পুকুরধারে, পিতামহ নাক ডাকাচ্ছেন যেখানে যুগপ্রায় শব্দহীন, তার ঠিক পাশে যেসব গমখেত এখন অপেক্ষা করছে পেকে ওঠবার, চঞ্চলা বাতাস এসে একটিবার নাচিয়ে যাবার পর, আকাশের দিকে চেয়ে নিশ্চুপ হয়ে আছে, আকাশে অর্থাৎ আলোর বাগানে, যাতে ফুটে আছে রাশি রাশি জ্যোতিষ্ক কুসুম, অথচ তাদের, ভুবন যা বলে গেল, উল্লেখ করার মতো কোনো ক্ষয়ক্ষতি নেই, হতাহত হয় নি তার একটিও অপুষ্ট শীষ

স্বপ্নবৃক্ষ আমার, যার পাপড়ি ঝরে গেল বলে আজ এই উত্তীর্ণ সন্ধ্যায় শোকসভা বসিয়েছি, তার তলে এখন ছড়িয়ে আছে সব মৃত স্বপ্নের হাড়গোড় কঙ্কাল, ঠিক বোশেখে যেমন ঝড়ের তোড়ে ঝরে আমের বিকশিত বোল, এই আমি স্বপ্নহীন, কার পানে চেয়ে চেয়ে কাটাব আমার অনাগত কাল

No comments: